বিজনেস আইডিয়া খুঁজে বের করার ৮টি পদ্ধতি
আচ্ছা আপনি কি একটি বিজনেস শুরু করতে চাইছেন ? কিন্তু একটি সময়োপযোগী ও লাভজনক বিজনেস আইডিয়া খুজে পাচ্ছেন না?
আজকে আপনাকে শুধু একটি বিজনেস আইডিয়া নয়, শিখানো হবে অসংখ্য বিজনেস আইডিয়া খুজে বের করার উপায় ।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব বিজনেস আইডিয়া খুঁজে বের করার ৮টি পদ্ধতি নিয়ে,যেগুলো আপনাকে আপনার নতুন বিজনেস শুরু করতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে আমার ধারণা।
বিজনেস এর দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দটি হলো SWOT
SWOT মানে
- Strengths
- Weakness
- Opportunities
- Threats
অর্থাৎ
- শক্তি
- দূর্বলতা
- সুযোগ
- ঝুঁকি
ব্যবসা করতে গেলে এই চারটি উপাদানের উপর গুরুত্ব দিতে হয়। প্রতিটি ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে এই চারটি উপাদানের উপর।
উপরে উল্লেখিত চারটি বিষয় ও আপনার চারপাশের মানুষের জীবনযাপন এবং মানুষের প্রয়োজনীয়তার দিকে নজর দিলেই আপনি সহজেই বিভিন্ন ধরনের বিজনেস আইডিয়া খুঁজে পাবেন।
বিজনেস আইডিয়া খুঁজে বের করার ৮টি পদ্ধতি
১। নিজের সাথে একটি নোটবুক রাখুন
আপনার দৈনন্দিন জীবনের মাঝে আপনাকে অনেক কাজের ভিতর দিয়ে যেতে হবে। আপনাকে অনেক মানুষের সাথে মিশতে হবে এবং তাদের সাথে কথাবার্তা বলতে হবে।
কখন কোন সময় আপনার মাথায় বিজনেস আইডিয়া চলে আসবে তা বলা যায় না? তাই নিজের সাথে একটি ছোট নোটবুক রাখুন।
যাতে কোন বিজনেস আইডিয়া আপনার মাথায় আসলে সাথে সাথে লিখে ফেলতে পারেন। যাতে সেই আইডিয়াটি আপনার মস্তিষ্ক থেকে হারিয়ে না যেতে পারে।
আপনি চাইলে আপনার মোবাইলের নোটবুক ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সাথে একটি আলাদা নোটবুক রাখার প্রয়োজন থাকবে না।
২। আপনার আগ্রহের বিষয়গুলোকে নেড়েচেড়ে দেখুন
বিজনেস আইডিয়া পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নিজের আগ্রহের বিষয়গুলোকে নেড়েচেড়ে দেখা।
যে সকল বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে সে সকল বিষয়ে দিয়ে কোন বিজনেস শুরু করা যায় কিনা সেটি প্রথমে ভেবে দেখুন।
আপনার পছন্দের বিষয়কে আপনার পেশায় রূপান্তরিত করতে পারলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
কারণ আপনি আপনার ভাললাগা বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। তাই আপনার আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। দেখুন তার থেকেও এক বা একাধিক বিজনেস আইডিয়া আপনি পেয়ে যেতে পারেন।
৩। আপনার দক্ষতার দিক থেকে ভাবুন
হয়তো আপনি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে এক বা একাধিক বিষয়ে দক্ষ থাকতে পারেন। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ তা নিয়ে ভেবে দেখুন।আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কোন বিজনেস শুরু করা যায় কিনা? নিজের দক্ষতাকে বিজনেসের কাজে লাগাতে পারলে আপনি অনেক তাড়াতাড়ি সফলতার মুখ দেখতে পাবেন।
তাই আপনার দক্ষতার দিকে নজর দিন। কে জানে এই দক্ষতা দিয়ে হয়তো আপনাকে এক বা একাধিক বিজনেস আইডিয়া দিতে পারে।
৪। মানুষের প্রয়োজনীয়তার দিকে নজর দিন
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কোন কোন জিনিসের প্রয়োজন রয়েছে তার দিকে তাকালেই আপনি অনেক ধরনের বিজনেস আইডিয়া পেয়ে যাবেন।মনে রাখবেন -
প্রয়োজনই মানুষের প্রেরণা ও উদ্ভাবনের উৎস। সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের জীবনে নতুন নতুন ব্যবহার তৈরি হয়, মানুষ নতুন জিনিসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। মানুষের প্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্য উদ্ভাবিত হয়েছে সেই চাহিদা পূরণের জন্য মানুষের নিরন্তর প্রচেষ্টা থেকে। নতুন চাহিদার সাথে নতুন উদ্ভাবন এসেছে।
আপনার সমাজে কোন কোন পণ্য বা সেবার মান খারাপ তার দিকে তাকান। আপনার আশেপাশে কোন কোন পণ্য এখনো নেই তা খুঁজে বের করুন।
এগুলো আপনাকে নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া দেবে। আপনার আশেপাশের মানুষ কোন সমস্যায় ভুগছে কিনা তা দেখুন? আপনি কি তার সমাধান দিতে পারেন?
যদি পারেন তবে সেটিকে আপনার বিজনেস হিসাবে দাঁড় করাতে পারেন। আপনার অঞ্চলে অনেক পণ্য বা সেবা থাকলে তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
সকল প্রতিষ্ঠান হয়তো মানুষের মন জয় করতে পারেনি। তবে আর আপনি বসে আছেন কেন? এখনই লেগে যান সেই সমস্ত কাজে।
যা আপনাকে ব্যবসায়িকভাবে হয়তো সফল করে তুলবে। তাছাড়া এই যুগে তথ্য সেবা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিজনেস সেক্টর।
তবে এই সেক্টরে দক্ষ লোকের এখনো অনেক অভাব রয়েছে। আপনি আপনার এলাকায় তথ্যসেবা চালু করতে পারেন।
৫। নিজের সুবিধা অসুবিধার কথা ভাবুন
নিজের প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা এবং অসুবিধার কথা ভাবুন। এগুলোই আপনাকে অনেক নতুন বিজনেস আইডিয়া এনে দিবে।
আপনি কোন কোন ব্যাপারে অসুবিধায় রয়েছেন তা ভেবে দেখুন। সেই ব্যাপারে হয়তো আরো অনেকে অসুবিধায় রয়েছ।
এমনিভাবে আপনার প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবুন। কোন কোন জিনিসের প্রয়োজন আপনি আপনার লোকালয় বসে পূরণ করতে পারছেন না?
সেসকল প্রয়োজন হয়তো আপনার এলাকার অন্যরাও ভোগ করতে পারছে না। আপনি সে সমস্ত জিনিস বা সেবা প্রদানের মাধ্যমে বিজনেস শুরু করতে পারেন।
৬। মানুষের কথা মন দিয়ে শুনুন
আপনার বিজনেস আইডিয়া খোঁজার জন্য মানুষের কথা মন দিয়ে শুনতে হবে। অনেক সময় মানুষের বিভিন্ন কথা থেকে বিভিন্ন ধরনের বিজনেস আইডিয়া আপনার মাথায় আসতে পারে।
তাই মানুষের সাথে কথা বলার সময় তার কথা মন দিয়ে শুনুন। এছাড়াও বিভিন্ন সফল ব্যবসায়ীদের জীবনী সম্পর্কে জানুন। তাদের লেখা বই পড়ুন।
এছাড়াও নতুন নতুন সকল প্রযুক্তি ও আবিষ্কার সম্পর্কে আপডেট থাকতে নিয়মিত জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমগুলো ফলো করুন। দরকারি বার্তা
যা আপনাকে নতুন নতুন বিষয় ভাবতে ও অনেক ধরনের বিজনেস আইডিয়া পেতে সাহায্য করবে।
৭। আপনার আইডিয়াগুলোকে নোট করুন
বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আপনার মাথায় অনেক আইডিয়া আসবে। আইডিয়াগুলোকে কাগজে /মোবাইল নোটবুকে লিখে ফেলুন। এরপর বেশ খানিকটা সময় নিয়ে এসকল আইডিয়া নিয়ে নিজে নিজে আলোচনা করুন।
এগুলোর সম্ভাবনা, সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো বিবেচনা করুন। এই চিন্তা-ভাবনার সময় আপনার মাথার আরো নতুন আইডিয়া আসতে পারে অথবা পুরাতন কোনো আইডিয়াকে আপনি নতুন করে সাজাতে পারবেন।
৮। আপনার আশেপাশের চলমান ব্যবসাগুলো নিয়ে গবেষণা করুন
আপনার আশেপাশে অনেক ধরনের ব্যবসা বিদ্যমান রয়েছে। বিভিন্ন মানুষ নিজেদেরকে বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িয়ে নিয়েছে।
আপনি আইডিয়াগুলোকে নির্বাচন করার পরে তাদের সেসকল ব্যবসাগুলো নিজে বিচার-বিশ্লেষন করার কাজে মনোনিবেশ করুন। ব্যবসায়িকভাবে সফল হওয়ার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
সঠিক গবেষণা ছাড়া কোন ব্যবসা শুরু করলে তাতে লাভের চেয়ে লোকসানের সম্ভাবনা অনেক বেশি।আর আপনি যখন এক বা একাধিক ব্যবসা নিয়ে রিসার্চ করবেন, তখন আপনার মাথায় অনেক ধরনের নতুন নতুন ব্যবসার আইডিয়া আসতে পারে।
তো আর দেরি কেন? বের করে ফেলুন যেকোনো একটি বিজনেস আইডিয়া! হয়ত এই আইডিয়াই হতে পারে আপনার সফল বিজনেসম্যান / শিল্পপতি হবার গল্পের প্রথম ধাপ।